শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন স্থাগিত ॥ ক্ষুভে ফুঁসছে নেতাকর্মীরা॥ প্রতিবাদ সমাবেশ রাজাকারদের পাহারাদার দখলদার ইউনূস সরকারের প্রহসনের রায় ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ৫ই আগষ্ট নোয়াখালী,চাটখিল থানা লুটের অস্ত্রে দিয়ে নিজেই নিজের গুলিতে আহত হয়ে মৃতুর ৯ মাস পর আদালতে অভিযোগ =!! ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে রায়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট ঘোষণা মানবাধিকার সংগঠন ঐক্য পরিষদের পরিচিতি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত অভয়নগরে অগ্নিবীণা ১২৬ তম নজরুল জয়ন্তী উৎসব ‘২০২৫ পালিত। মেধা মূল্যায়ন ২০২৪ এর বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ! বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া আইডি খুলে প্রতারণা খামারের গরু নিয়ে হাটে এসেছেন বিক্রির আশায়, গরুর দাম প্রত্যাশিত না হওয়ায় পড়েছেন বিপাকে ! ফটিকছড়ি জনকল্যাণ পরিষদের পুনর্গঠিত নতুন কার্যকরী কমিটি প্রথম সভা

ঝিনাইদহে বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের শিকার বিএনপি জামায়াতের ১৯ নেতাকর্মী

ঝিনাইদহে বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের শিকার বিএনপি জামায়াতের ১৯ নেতাকর্মী

মোঃ হামিদুজ্জামান জলিল স্টাফ রিপোর্টার

বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের শিকার যুবদল নেতা মিরাজুল ইসলাম মীর্জা ছিলেন এক প্রতিবাদী যুবক। অন্যায় দেখলেই করতেন প্রতিবাদ। সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে চক্ষুশুল হয়ে ওঠে এলাকার আ’লীগের কাছে। সরকার বিরোধী আন্দোলনে থাকতেন সক্রিয়ভাবে সামনের সারিতে। আর এটাই কাল হয় দাড়ায় তার জীবনে। মাত্র ২৫ বছর বয়সে মীর্জা বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের শিকার হন। ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ ঝিনাইদহ শহরের একটি ছাত্রাবাস থেকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই মাসের ২৫ তারিখে মীর্জার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পন্নাতলা মাঠে। মীর্জার ১০৭ বছর বয়সী পিতা জোনাব আলী তার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ। ছেলে হারানোর শোক আর কান্নায় কেটে গেছে ৯ বছরেরও বেশি সময়। বয়সের ভারে আর চলাফেরা করতে পারেন না। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের প্রতি মাসে পাঠানো অনুদানে তার সংসার চলে না। ফলে স্ত্রী বুলবুলি খাতুন বৃদ্ধ বয়সে পরের বাড়ি কাজ করে সংসার চালান। শুধু যুবদল নেতা মিরাজুল ইসলাম মীর্জাই নয়, তার মতো বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের ১৯ নেতাকর্মী। আর চরমপন্থি সংগঠনের ক্যাডার নিহত হয়েছে ১৪ জন। লাশ পাওয়ার পর আজ পর্যন্ত পরিচয় মেলেনি ৮ জনের। কেন্দ্রে পাঠানো বিএনপির খুন গুমের তালিকা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪০ মাসে জেলায় বহির্ভুত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ৪২ জন। এরমধ্যে বিএনপির ৪ জন, জামায়াত শিবিরের ১৫ জন, সাধারণ ব্যবসায়ী একজন, সন্ত্রাসী ১৪ জন ও অজ্ঞাত রয়েছেন ৮ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন, ঢাকার শনির আখড়া এলাকার বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম, কালীগঞ্জ উপজেলার নলভাঙ্গা গ্রামের বিএনপি নেতা রবিউল ইসলাম রবি. ঝিনাইদহ শহরের খাজুরা গ্রামের বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফার ছেলে গোলাম আজম পলাশ, একই গ্রামের দুলাল হোসেন, আরাপপুর ক্যাডেট কলেজ পাড়ার ব্যবসায়ী তমুর রহমান তুরান, হরিণাকুন্ডুর রঘুনাথপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি ইদ্রিস আলী পান্না, শৈলকুপার শিবির কর্মী ইবি ভার্সিটির ছাত্র সাইফুল ইসলাম মামুন, ঝিনাইদহ শহরের জনপ্রিয় শিবির নেতা ইবনুল পারভেজ, মেধাবী ছাত্র জহুরুল ইসলাম, তারিক হাসান সজিব, কুষ্টিয়ার আনিছুর রহমান, ঝিনাইদহ শহরের শহীদ আল মাহমুদ, কালীগঞ্জের ঈশ^রবা গ্রামের সোহানুর রহমান সোহান, একই উপজেলার বাকুলিয়া গ্রামের শামিম হোসেন, চাপালী গ্রামের আবুজার গিফারী, সদর উপজেলার কালুহাটী গ্রামের হাফেজ জসিম উদ্দীন, সদর উপজেলার অশ^স্থলী গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক ও জামায়াত কর্মী আবু হুরাইরা, কোটচাঁদপুরের বলাবাড়িয়া গ্রামের জামায়াত কর্মী হাফেজ আবুল কালাম ও একই উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের জামায়াত নেতা এনামুল হক বিশ^াস। বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের অভিযোগ সাংগঠনিক ভাবে দক্ষ ঝিনাইদহের এসব কর্মীদের টার্গেট করে আওয়ামী লীগ পুলিশ দিয়ে একের পর এক হত্যা করে গেছে। আর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল অতি উৎসাহী কতিপয় পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজনেরা। বিশেষ করে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মদদে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হন বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা। প্রথমে পুলিশ, ডিবি বা র‌্যাব পরিচয়য়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হতো। কিছুদিন পর ঝিনাইদহের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যেত তাদের। বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আলী আজম মোঃ আবু বকর জানান, ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের আমলে ঝিনাইদহে জামায়াত শিবিরের ১৬ নেতা কর্মীকে খুন করা হয়েছে। কেন্দ্র থেকে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে মামলা করার। ইতিমধ্যে আমরা জামায়াত কর্মী আব্দুস সালাম হত্যার ঘটনায় মামলা করেছি। পর্যায়ক্রমে সব খুনের মামলা করা হবে এবং সেই প্রচেষ্টা চলছে। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. এম এ মজিদ বলেন, খুনি হাসিনা সরকারের আমলে ঝিনাইদহে যেসব বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। দ্রæতই বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত কুশিলবদের বিরুদ্ধে মামলা করে আইনের আওতায় আনা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page