শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৫০ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
ছিলোনিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক মিলনায়তন ও প্রধান শিক্ষকের কক্ষ উদ্বোধন কারাগার” আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নারী কর্মীদের জন্য যেন মরণ ফাঁদ। শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে কালিয়ায় বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত রিকশাচালক বাবার দুই ‘রাজকন্যা’র স্বপ্নপূরণ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বুশরা ও তৃষা ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে জমি নিয়ে প্রতারণা ভাগ্নের সাথে মামার। সংযুক্ত আরব আমিরাত দুবাই শাখার ব্যবস্থাপনায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ:) মাহফিল কালীগঞ্জে জমির মূল্যের দাবিতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ জনগণের মুক্তির প্রত্যাশা অপরাধ ও জঙ্গী উত্থানের অবসান ঘটাতে শেখ হাসিনাকেই চায় বাংলাদেশ আনোয়ারায় গ্রীন চট্টগ্রাম এ্যালায়েন্সের আয়োজনে বৃক্ষ রোপণ ও বিতরণ অনুষ্ঠান আজ বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু নির্বাচনকে ‘প্রহসন ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র’ বললেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইনান

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ।

মোঃ তালাত মাহামুদ বিশেষ প্রতিনিধি, নরসিংদী।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ওখানকার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। নিজ দপ্তরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঠিকাদারি কাজে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। অনিয়ম করে বারবার ঠিকাদারি কাজ বাড়িয়ে নিতেন এই কর্মকর্তা। এ কারণে সরকার প্রাপ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বানের সুযোগ থাকত না বলে বৃদ্ধি পায় সরকারি কাজের খরচ। তবে এসব অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে তিনি বঞ্চিত নন বলে জানিয়েছেন এ প্রতিবেদককে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দপ্তরের কাজ হাতিয়ে নিতে গোপনে খুলেছেন আপন ভাইয়ের নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার নাম দিয়েছেন মা এন্টারপ্রাইজ। আর এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একের পর এক হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি টাকার কাজ। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কোনো কর্মকর্তা নিজে বা তার স্বজনদের কেউ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঠিকাদারির কাজে যুক্ত হতে পারবে না। তবে সেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই একের পর এক কাজ হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। এতে করে সাধারণ ঠিকাদারদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ আর হতাশা।

আরো জানা গেছে, ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতি বছর এই কেন্দ্রটিতে প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয়সহ উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ দেয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এসব কাজের বাস্তবায়নে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে বেশির ভাগ কাজই হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজের আপন ভাই সাইফুল ইসলামের মালিকানাধীন মা এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মোহাম্মদ আলী ফিরোজ ২০১৭ সাল থেকে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দায়িত্বে রয়েছেন। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে এই অনিয়ম করে যাচ্ছেন তিনি। এতে করে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারি কাজের কার্যাদেশ না পেয়ে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ ঠিকাদাররা।

ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ট্রেনিং সেন্টারের হাসান অ্যান্ড কোং-এর ঠিকাদার মো. আল হাসান, খান ট্রেডার্সের ঠিকাদার জহিরুল ইসলামসহ একাধিক ঠিকাদার জানিয়েছেন, উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজ দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় ঘুষ নিতেন। তবে এখন তিনি নিজেই আপন ভাইয়ে নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে নিজেই কাজ হাতিয়ে নিচ্ছেন। গত ৫ বছর ধরে তার প্রতিষ্ঠান মা এন্টারপ্রাইজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধিকাংশ কাজ হাতিয়ে নেয় নিজের চেয়ার ক্ষমতা খাটিয়ে। এতে করে সাধারণ ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছেন।

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৮ অনুযায়ী কোনো কর্মকর্তা নিজে বা তার স্বজনদের কেউ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঠিকাদারির কাজে যুক্ত হতে পারবে না। একই সঙ্গে দরপত্রের সঙ্গে জড়িত মূল্যায়ন কমিটির কেউ কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে পারবে না। তবে উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজ করেছেন এর ব্যতিক্রম। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্রের মূল্যায়ন কমিটিতে থেকেও নিজ দপ্তরের কাজ হাতিয়ে নিতে গোপনে সহোদর ভাইয়ের মালিকানায় নিজেই খুলে বসেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। একের পর এক বাগিয়ে নিয়েছেন সরকারি কাজের ঠিকাদারি।

ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের আঞ্চলিক হিসাব দপ্তরের উপপরিচালক নূর-জাহান বেগম জানান, গত ৫ বছরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দরপত্রের বেশিরভাগ কাজই পায় মা এন্টারপ্রাইজ। এসব কাজের অর্থ সংগ্রহে কোনো সময়ই প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইফুল ইসলামকে দেখেন নি তিনি। বিলের অর্থ প্রতিবারই অন্য ব্যক্তি সংগ্রহ করত।

এসব বিষয়ে উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজ বলেন, মা এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে তার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের পরিচয়ের সঙ্গে নিজের পিতামাতার নাম ও ঠিকানা মিল থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন সেটা মিলতেই পারে।

এদিকে ঘোড়াশাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক আরিফুর রহমান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page