ফকির লালন শাহ্ ছিলেন মানব ধর্মে দীক্ষিত এক মরমী সাধক………. ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী
মোহন আলী স্টাফ রিপোর্টার।
বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বলেছেন, ফকির লালন শাহ ছিলেন মানব ধর্মে দীক্ষিত এক মরমী সাধক।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেউড়িয়াতে মরমী সাধক ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস উপলক্ষে লালন সাঁইজির মাজারে লালন উৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারাদেশ তথা সারাবিশ্ব থেকে লালনের অগণিত ভক্ত অনুরাগীরা এই স্মরণোৎসব এসে লালনের মন্ত্রে দীক্ষা লাভ করেন। এবছরও ১৭,১৮ ও ১৯ অক্টোবর এই তিন দিন লালন
স্মরণ উৎসবে ভক্ত অনুসারীরা ভীড় জমিয়েছিলেন তার আত্মিক বাণীতে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার জন্য।
লালন সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে সারাদেশ তথা বিশ্বব্যাপী তার সকল ভক্ত, অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টাই ছিলেন ফকির লালন শাহ। তাই তো বলেছিলেন, ব্রাহ্মণ চন্ডাল চামার মুচি/একি জলেই সব হয় গো সুচি/দেখে শুনে হয় না রুচি/যমে তো কাউকে ছাড়বে না ”।
তিনি এমন সমাজ গঠনের কথা বলেছিলেন যেখানে জাতি, ধর্ম বর্ণ,গোত্র, সাদা- কালো, ধনী-গরিব,
রাজা-প্রজা নির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে সকলের একটাই পরিচয় হবে,তিনি মানুষ। তাইতো তিনি বলেছিলেন, “জাত গেল জাত গেল বলে/
একি আজব কারখানা”। আর তাই তিনি উপলব্ধি করতে বলেছিলেন তার মরমী বার্তার মাধ্যমে যে,
” মানুষ ভোজলে, সোনার মানুষ হবি।” লালন শাহ সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে বলেছিলেন, এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে/ যেদিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান /জাতি গোত্র নাহি রবে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা আরো বলেন, বিগত ১৭ বছরের মধ্যে এবার লালন মেলায় সবচেয়ে বেশি ভক্ত অনুরাগী ও দর্শনার্থীরা এসেছেন। অনেকদিন পর এবারের লালন স্মরণোৎসব যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার আমলে দেশের প্রতিটি সেক্টর বৈষম্যে জর্জরিত ছিল। বাদ পড়েনি লালনের এই ছেউরিয়ার প্রাঙ্গন। নতুন বাংলাদেশে বৈষম্যের কোন ঠাঁই নেই। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি সেখানে লালন সাঁইজির মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে আমাদের সকলকে মানবতাবাদী হতে হবে।মনে রাখতে হবে এবারের গণঅভ্যুত্থানকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে না পারলে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ পিছিয়ে যাবে।দেশি-বিদেশি শত্রুরা ওত পেতে আছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নস্যাৎ করার জন্য। তাই বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের জনক, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের স্রষ্টা,শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের গড়া এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী, গণতন্ত্রের মা, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ধমনীতে মিশে থাকা দল বিএনপিকে এই সংকট উত্তরণে শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে এগিয়ে আসতে হবে। এই লক্ষ্যে বর্তমান বিএনপি’র কর্ণধার ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন, দেশনায়ক তারেক রহমানের ৩১ দফার আলোকে বাংলাদেশকে সাজাতে হবে। তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, দল ও দলের বাইরের সকল মানুষের সাথে সমান আচরণ করে বৈষম্যহীন দেশ গঠন করতে হবে। সকল ভেদাভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশের উন্নতিতে মনোনিবেশ করতে হবে।গণতন্ত্র রক্ষায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তারেক রহমানের এই নির্দেশ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রত্যেকটি নেতা থেকে কর্মী পর্যায় পর্যন্ত নিরলসভাবে পালন করে যাচ্ছে। আর এভাবেই আমরা লালনের সুধা মিশ্রিত জাতপাতহীন সমাজ কাঠামোর আদর্শিক বাস্তবায়ন করতে পারব।
উল্লেখ্য ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী কুষ্টিয়া-২( ভেড়ামারা- মিরপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট সংগঠক, রাজনীতিবিদ ও বিএনপি’র প্রয়াত নেতা আব্দুর রউফ চৌধুরীর সন্তান।