সাঁথিয়ায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুলতানের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়
মোঃ সাবেদুল সরকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি। পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সুলতান আহমেদ এর বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা,শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি,প্রমাপ অনুযায়ী স্কুল পরিদর্শন না করা, বিভিন্ন রেজিস্টার মেইনটেইন না করা,শিক্ষকদের নিকট হতে ধারের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নেয়াসহ প্রচুর অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষকবৃন্দের অভিযোগ,উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক প্রেরিত পত্র সূত্রে জানা যায়,বিশ্ব শিক্ষক দিবস সহ ক্লাস্টারের শিক্ষকসহ উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত থাকেননি। তার নামে সরকারি একটি মোটর সাইকেল বরাদ্দ থাকলেও তা ব্যবহার না করে অন্য স্কুলের তার পছন্দের শিক্ষককে নিয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। প্রমাপ অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৯ মাসে ৯০টি স্কুল পরিদর্শনের কথা থাকলেও মোট পরিদর্শন করেছেন ৬১টি। তিনি পরিদর্শনের নির্ধারিত লক্ষ্যে মাত্রা অর্জন না করলেও পরিদর্শনের জন্য নির্ধারিত পুরোটাই ভ্রমন ভাতা উত্তোলন করেছেন। দিন ব্যাপি বিদ্যালয় পরিদর্শন করার কথা থাকলেও তিনি তা কখনই করেন না। এছাড়া স্কুলে পরিদর্শনে গেলে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করতে বলেন। তিনি সব সময় দায়সারা গোছের পরিদর্শনে যান। তার ক্লাস্টারের বিদ্যালয় গুলোর গুনাগতমানসহ রেকর্ড রেজিস্টারের অবস্থা খুবই দুর্বল। শিক্ষকদের আগমণ বা প্রস্থাণে বিষয়সহ কোন পরিদর্শনের বিষয়ই উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট দাখিল করেন না। তার বিরুদ্ধে গুরুত্বর অভিযোগ সপ্তাহে তিনি ২/৩ দিনের বেশি অফিসে আসেন না। এছাড়া তিনি ১৫ মাস সাঁথিয়া চাকুরি করলেও বিদ্যালয় পরিদর্শনে প্রাপ্ত ১টি অনিয়মের বিষয় ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেন নাই। এ পর্যন্ত তিনি তার গতিবিধি রেজিস্টার, পরিদর্শন রেজিস্টার,শিক্ষকদের বিল রিপোর্ট রেজিস্টার তৈরী করেন নাই। তিনি চলতি বছরে ১০ বার নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করলেও ১টি আবেদন ছাড়া কোন ছুটির আবেদন অফিসের নিকট জমা দেননি। প্রতিটি কর্মকর্তার কর্মস্থলে অবস্থান বাধ্যতামূলক হলেও তিনি পাবনা হতে অফিস করেন। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তিনি সাঁথিয়ার শিক্ষকের মধ্যে বিভিন্ন মিথ্যে ও বানোয়াট কথা বলে শিক্ষকদের দু-গ্রুপে বিভক্ত করেছেন। এতে করে দু'পক্ষ মুখো মুখি অবস্থানের পর্যায়ে চলে গেছেন। দুপুরের সময় কোন শিক্ষক তার কাছে কাজে আসলে তিনি উপযাচক হয়ে তার কাছে দুপুরের খাবার আদায় করে থাকেন। সুলতান আহমেদ এর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ,শিক্ষকদের তিনি ২০২৩ সালের চূড়ান্ত প্রান্তিক ২০২৪ইং সালের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ১ম ও ২য় প্রান্তিক মূল্যায়ন শেষে যে টাকা অবশিষ্ট রয়েছে তা এখন পর্যন্ত হিসাব বা ফেরত দেননি। এছাড়া তিনি পূর্বের কর্মস্থল আটঘরিয়া হতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ঋণ করে টাকা না দিয়ে চলে এসেছেন। সাঁথিয়া তে তিনি ইতোমধ্যে প্রায় ২ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছেন। সুলতান আহাম্মেদের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তিনি বলেন,অভিযোগগুলো সত্য নয় আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা জানান,বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। তার বিরুদ্ধে আনত অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সুলতান আহমেদের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম বলেন,তিনি যদি এ ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে থাকেন,তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।