 
     ইতিহাস সাক্ষী ৪ ডিসেম্বর দুপুরে ইয়াহিয়া রেডিওতে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে,
ইতিহাস সাক্ষী ৪ ডিসেম্বর দুপুরে ইয়াহিয়া রেডিওতে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে,
রিপোর্ট:-দৈনিক বাংলার মুক্তকন্ঠ-? ইতিহাস সাক্ষী ৪ ডিসেম্বর দুপুরে ইয়াহিয়া রেডিওতে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে,এদিকে ৩ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী গঠিত হওয়ার পর রাতেই অপারেশন শুরু হয়ে যায়। চূড়ান্ত লক্ষ্য ঢাকা দখল ও পাকিস্তানীদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। মিত্রবাহিনী এবং মুক্তিবাহিনীর দলগুলো সোজাসুজি পাকিস্তানী ঘাঁটিগুলোর দিকে না গিয়ে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যায়। যশোর,হিলি,শ্রীহট্ট, কুমিল্লা ও ফেনীর শক্ত পাক-ঘাঁটির দিকে না গিয়ে পাশ কাটিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। ঘাঁটিগুলোতে অপেক্ষমান পাকবাহিনী যাতে মনে করে যে মিত্রবাহিনী তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে সেইজন্য প্রত্যেক পাক-ঘাঁটির সামনে গোলন্দাজ বাহিনীর কিছু কিছু লোক রেখে যাওয়া হল।
পাকিস্তানীরা এই রণকৌশল ধরতে পারেনি। পাকিস্তানী সমর নায়কেরা তখনও বুঝতে পারেনি মিত্রবাহিনী কোন দিক দিয়ে ঢাকা পৌঁছাতে চাচ্ছে। মিত্র বাহিনীর গোলন্দাজদের গোলাবর্ষণের বহর দেখে পাকিস্তানীরা মূল সড়কগুলো আগলে বসে থাকে। সীমান্ত শহর দর্শনা সম্মিলিত বাহিনীর দখলে। পাক বিমানবাহিনীকে অবশ্য আগেই অনেকটা ঘায়েল করে ফেলা হয়েছিল। তাদের বিমান ঘাঁটিগুলিও বিধ্বস্ত। ঢাকা এবং চট্টগ্রামের আকাশে চলতে থাকে জোর বিমান যুদ্ধ। সম্মুখ সমরে জয়ের সাথে দরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিলে অন্য দেশ গুলোও এগুবে না! এই বাস্তবতায় ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ইন্দিরা গান্ধীর কাছে জরুরি চিঠি পাঠান। পাকিস্তানের আক্রমণের সমুচিত জবাব দিতে দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা দরকার। এজন্য প্রয়োজন ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি। সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর চিঠিতে লিখেনঃ ৩ ডিসেম্বর আপনাদের দেশে পাকিস্তান সামরিক জান্তার অতর্কিত আক্রমণের কথা শুনে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।.ইয়াহিয়া ও তার জেনারেলদের মাধ্যমে আপনার দেশে যে ধ্বংস সংঘটিত হয়েছ এখন আমাদের উচিত এই আগ্রাসন দমন করতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এর প্রতিবাদ করা ও স্বাধীনতা লাভের জন্য একজোট হওয়া। তাই আমি অনুরোধ করতে চাই,আমরা যদি কূটনৈতিকভাবে একজোট হই তাহলে সহজেই আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা লাভ করতে পারব। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে,বাংলাদেশের মানুষ ও বাংলাদেশ সরকার এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে যে কোন বিপদেই দুই দেশের পাশে সমানভাবে দাঁড়াবে। আমরা আশাবাদী যে আমাদের এই একতা ইয়াহিয়া বাহিনীর ঘৃণ্য চক্রান্তকে প্রতিহত করবে ও আমাদেরকে একটি আশাব্যঞ্জক ফলাফল দেবে। আমরা যে কোন বিপদেই আপনাদের পাশে দাঁড়াব ও পূর্ণ সহযোগিতা করব। তথ্যসূত্রঃ-স্বাধীনতা যুদ্ধ ইতিহাস দলিলপত্র (দশম খণ্ড) ৭১ এর দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী দৈনিক পাকিস্তান (৫ ডিসেম্বর,১৯৭১) বিজয়ের মাসে এই কৃতজ্ঞতা-মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনো।