বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগের সমাবেশে এম. নুরুল হুদা চৌধুরী:জাহাজী শ্রমিকদের ১১ দফা দাবী মেনে নিতে গরিমসি করছে সরকার ও মালিক পক্ষ
স ম জিয়াউর রহমান,চট্টগ্রাম জেলা স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের অধিকাংশ পণ্য পরিবহণ হয় নৌ-পথে। সেই নৌ-পথেই এখন চলছে অরাজকতা। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। নৌ সেক্টরে চলমান সংকট নিরসন লাইটারেজ জাহাজসহ সকল শ্রমিকদের গেজেট অনুযায়ী বকেয়া বেতন পরিশোধ,নৌ পথের চুরি,ডাকাতি,ছিনতাই, চাঁদাবাজি,সন্ত্রাস প্রতিরোধ,নৌ শ্রমিকদের বেকারত্ব দূরীকরণসহ বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দাবিতে মানববন্ধন,মিছিল ও সমাবেশ গতকাল ৬ডিসেম্বর শুক্রবার, বিকাল ৪টায় মাঝির ঘাট মোড়ে চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি এম. নুরুল হুদা চৌধুরী। তিনি বলেন, মালিক পক্ষের কিছু কুচক্রী মহলের যোগসাজশে ও সরকারের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কারণে ১১ দাবি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফেডারেশনের আওতাভুক্ত বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন রেজি. নং- বি-২১৪৮ চট্টগ্রাম জেলা শাখা, চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি. নং- চট্ট-২০৯০ সহ বিভিন্ন বেসিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে উক্ত সমাবেশে উত্থাপিত হওয়া ১১ দফা সমূহ হল- ১. জাহাজী শ্রমিকদের মালিক কর্তৃক নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্র, সার্ভিস বুক প্রদান ও কল্যাণ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে কন্টিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করতে হবে। ২. গত ৩০ মার্চ ২০২৩ইং এর গেজেট অনুযায়ী বকেয়া পাওনা সহ বেতন পরিশোধ করতে হবে। ৩. মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১২ লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে। ৪. ভারতগামী জাহাজী শ্রমিকদের ভারতের সীমানার ল্যান্ডিং পাস, পোর্ট ভিসা ও সুচিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। ৫বালুবাহী বাল্কহেড শ্রমিকদের উপর নৌ প্রশাসনের হয়রানী,মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে। ৬. নৌ-পথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও নৌ-প্রশাসনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ৭. নিরাপদে জাহাজ রাখার পোতশ্রয় নির্মান করতে হবে এবং চরপাড়া সী-বিচ পতেঙ্গা এলাকায় জাহাজের কিনারায় উঠানামার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত ঘাটের ব্যবস্থা করতে হবে। ৮.মাস্টার, ড্রাইভারশীস পরীক্ষা সহ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএ এর সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। ৯.চট্টগ্রামে সিরিয়ালের নামে জাহাজ মালিকদের সৃষ্ট সমস্যা সংকট তাদের নিজেদের ব্যাপার,যা জাহাজ মালিকদেরই সমাধান করতে হবে। ১০.সকল প্রকার জাহাজী শ্রকিকদের জন্য পোতশ্রয় নির্মাণ করে ইজারামুক্তভাবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। ১১. বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পেশকৃত ১১ দফার অমিমাংসিত দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। উক্ত সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান মাস্টার। আরও বক্তব্য রাখেন কার্যকরী সভাপতি আবু তাহের মাস্টার,সহ সভাপতি মো.আজগর হোসেন তালুকদার,বাংলাদেশ নৌ যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মনিরুল ইসলাম মাস্টার,চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো.আলাউদ্দিন,কার্যকরি সভাপতি নুরুল আলম মাস্টার,জল পরিবহণ কার্গো ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন হোসেন মন্জুর,চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.নুরুল হোসেন,মো:জাকির হোসেন রমজান আলী মাস্টার,সহ সভাপতি মো:সেলিম মাস্টার, বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম মাস্টার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি. মো.নাছির উদ্দীন,সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মো:কামাল উদ্দিন,দপ্তর সম্পাদক খলিল সিকদার,সদস্য মো: শাকিব হাওলাদার,মো:জসিম,দপ্তর সম্পাদক সেলিম উদ্দিন,সদস্য মো:রিয়াজ ড্রাইভার,আব্দুর রাজ্জাক রাজু সুখানী,সাজ্জাদ হোসেন,জনি সুখানী,আব্দুস সাত্তার সুখানী প্রমুখ। বক্তারা বলেন,এক কেন্দ্রীক জাহাজ পরিচালনায় আমাদের আপত্তি না থাকলেও শ্রমিক দিয়ে শ্রমিক নির্যাতন,পেঠানো,লাঞ্চিত করা,মামলা দেওয়ার ঘোর বিরোধী আমরা। সিরিয়ালের নামে এ ধরনের গর্হিত কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আগামীতে এ ধরনের অপকৌশলে শ্রমিকদেরকে ব্যবহার করে মালিকদের স্বার্থসিদ্ধিমূলক কাজের পুনরাবৃত্তি হলে আমরা কঠিন আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য থাকবো এবং প্রতিহত করা হবে।