ডাকসু নির্বাচনকে‘প্রহসন ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র’বললেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইনান
স ম জিয়াউর রহমান:-চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:=
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ‘প্রহসন ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। এক ভিডিও বার্তায় তিনি অভিযোগ করেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাধীনতাবিরোধী ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর অভয়ারণ্যে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে।
ইনান তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক সম্পর্ক তুলে ধরে বলেন, “আজকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচনের নামে আমরা এক ধরনের প্রহসন ও ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি।”
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেন, এই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে যা একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, একটি নির্দিষ্ট ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে জেতানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের তথ্য বিভিন্ন দলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অন্য প্রার্থীরাও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন।
নির্বাচনে ভোটারদের নিরুৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ভোটকেন্দ্র দূরে স্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেন ইনান। তিনি বলেন, “বঙ্গমাতা এবং কুয়েত মৈত্রী হলের ভোটকেন্দ্র নিউমার্কেটের কাছের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এবং শামসুন্নাহার হলের ভোটকেন্দ্র ইউল্যাব স্কুলে ফেলা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য ভোগান্তিকর। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করার অপচেষ্টা চলছে।”
শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান এই নির্বাচনকে দেশের জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করে বলেন, “এই অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনের নামে যে প্রহসনমূলক, শেখ হাসিনা বিহীন ও নৌকা বিহীন নির্বাচনের স্বপ্ন দেখছে, এটি তারই একটি মহড়া।”
ভিডিও বার্তায় তিনি ছাত্রলীগকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, এই দেশ আমাদের, এই মাটি আমাদের। একে রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে। আসুন, আমরা একযোগে এই দেশবিরোধী শক্তিকে প্রতিরোধ করি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, মুজিবাদর্শের সৈনিক হওয়ার কারণে হাজারো শিক্ষার্থী হলে থাকতে পারছে না এবং তাদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এই নির্বাচনকে তিনি একটি ‘নন-পার্টিসিপেটরি’ বা অংশগ্রহণহীন নির্বাচন বলে অভিহিত করেন এবং একে ছাত্রসমাজের সঙ্গে তামাশা হিসেবে বর্ণনা করেন।
বক্তব্যের শেষে তিনি ছাত্রলীগকর্মীদের হতাশ না হয়ে আস্থা রাখার আহ্বান জানান এবং দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে “দানবীয় আস্তানা” থেকে মুক্ত করে “মানবিক বিদ্যালয়ে” পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।