রাজবাড়ীর ১০০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি ২৪৯ জন এর বেশি রোগী
মোঃ জাহিদুর রহিম মোল্লা,জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী।।
রাজবাড়ীর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এখন দ্বিগুণের বেশি। এ অবস্থায় রোগী চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হাসপাতালে শয্যা কম থাকায় রোগীদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। হাসপাতালে বর্তমানে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজবাড়ী আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়,প্রত্যেকটি ওয়ার্ডেই ভর্তি রোগীর চাপ বেশি। ডায়রিয়া,সার্জারি,শিশু,গাইনি,মেডিসিন ওয়ার্ডে বরাদ্দকৃত বেডের চেয়ে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে ডেঙ্গু রোগী। অপরদিকে বহির্বিভাগেও রয়েছে রোগীর বাড়তি চাপ। ঠান্ডা,কাশি,জ্বর,নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে রোগীরা এসেছেন সেবা নিতে। রোগীর চাপ থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। জানা গেছে,রাজবাড়ীর একমাত্র ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল রাজবাড়ী আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল। জেলার পাঁচটি উপজেলা থেকেই বিভিন্ন রোগের সেবা নিতে এখানে রোগীরা আসে চিকিৎসা নিতে। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও এখানে প্রতিদিনই দ্বিগুণেরও বেশি রোগী ভর্তি থেকে। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল টিতে রয়েছে জনবল সংকট। তাইতো চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ অক্টোবর সদর হাসপাতালে ১০০ শয্যার বিপরীতে ২৪৯ জন রোগী ভর্তি ছিল। এর মধ্যে জেনারেল ওয়ার্ডে ২৩৮ জন,কেবিনে ১১ জন।২৪৯ জন ভর্তি রোগীর মধ্যে পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে ৩১ জন,মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ২৮ জন,পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ৪২ জন,মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ৪৯ জন,শিশু ওয়ার্ডে ৪৪ জন,গাইনি ওয়ার্ডে ৩৩ জন,ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২২ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। তিন বছরের বাচ্চাকে নিয়ে শিশু ওয়ার্ডে আছেন ফাহিমা নামে একজন। তিনি বলেন দুদিন ধরে তিন বছরের শিশু নিয়ে ভর্তি আছি। হাসপাতালে অনেক রোগী কোনোমতে ঠাসাঠাসি করে ভর্তি আছি অনেক সমস্যা হচ্ছে আমাদের। সদর হাসপাতালে পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগী জলিল মিয়া বলেন, ত ৩/৪ দিন যাবত জ্বর,ঠান্ডা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। রোগীর এত চাপ যা বলার বাইরে। চিকিৎসক ও নার্সরাও সেবা দিতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে।
বহির্বিভাগে গাইনি ডাক্তার দেখাতে আসা রুগিরা বলেন সকাল ৯ টায় ডাক্তারের রুমের সামনে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখনো আমি ২৫/৩০ জনের পরে। কখন ডাক্তার দেখাতে পারবো বলতে পারছি না। রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.এসএমএ হান্নান বলেন আমাদের সদর হাসপাতাল বর্তমানে ১০০ শয্যার হাসপাতাল। আমাদের ২৫০ শয্যার হাসপাতালের কাজ একদম শেষের দিকে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি আমরা বুঝে পাব। আমাদের ১০০ শয্যার হাসপাতালে গড়ে ২৬০ জন রোগী ভর্তি থাকে। গত ২৫অক্টোবরে হাসপাতালে ২৪৯ জন রোগী ভর্তি ছিল। গড়ে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী ভর্তি হয় এবং ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী ছাড়পত্র নিয়ে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন,১০০ শয্যার হাসপাতালে ২০০/২৫০ জন রোগী চিকিৎসা দিতে আমাদের খুবই কষ্ট হয়।জনবল কম থাকার কারণে এবং রোগীদের লজিস্টিকস সাপোর্ট কম থাকার কারণে একটু সমস্যা হয়। ১০০ শয্যা হাসপাতাল হলেও আমাদের ১৫০ টি বেড পাতানো রয়েছে। সব রোগীকে আমরা বেডে দিতে পারি না।অনেক রোগী এসে ফ্লোরে থাকে। তবে ফ্লোরে থাকলেও তাদের যত্নের কোনো কমতি নেই। ফ্লোর নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। বেডের ফোম পরিবর্তন করা হয়। তারপরও আমাদের দিক থেকে আমরা সর্বোচ্চ সেবাটা রোগীদের দিয়ে থাকি।