ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের ঢাবিতে তোফাজ্জল হত্যা:নেপথ্যে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি,
কি শুরু হয়ে গেছে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেদক ও সম্পাদকঃ
দৈনিক বাংলার মুক্তকন্ঠ সংবাদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ছাত্র লীগের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিশ্ব মিডিয়ায়। এ ঘটনার অভিযোগে শাহবাগ থানায় করা হত্যা মামলায় আজ ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার চার শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, বরিশাল বিএম কলেজের মেধাবী ছাত্র তোফাজ্জাল মা-বাবার মৃত্যুর পর কয়েকবছর ধরেই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। গত বছর ক্যানসারে মারা যান তার একমাত্র ভাইটিও। ফলে পৃথিবীতে আপন বলতে তার আর কেউ ছিলোনা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ স্বজন ও পরিচিতদের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে খাবার খেতেন।
খাবারের সন্ধ্যানে গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ছুটে যান তোফাজ্জল।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার রাত পৌনে ৮টায় ফজলুল হক মুসলিম হলের গেইটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে। পরে হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে ঢাবির শিক্ষার্থীরা সে ‘মোবাইল চুরি করেছে’ বলে এলোপাথারী চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। পরবর্তীতে সে মানসিক রোগি বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবারও খাওয়ানো হয়।
এজহারে বলা হয়েছে, পরবর্তীতে দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সাথে পেছনে হাত বেধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠিদ্বারা উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধরক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পরে। কয়েকজন শিক্ষার্থী বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষকদের জানালে, তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করে মেডিকেল নেয়া হয়।
এদিকে তোফাজ্জালকে মিথ্যা চুরির দায়ে নির্মমভাবে হত্যার আগে, ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তার এক নিকট আত্মীয়। তার মামতো বোন অভিযোগ করে বলেন, ফোন করে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনি কি তোফাজ্জলের মামা? তখন আমার আব্বু ধরছে, তখন বলছে তোফাজ্জলকে আমরা ধরেছি, সে ঢাবির হলে আছে, ওকে নিতে হলে ৩৫ হাজার টাকা দিতে হবে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ওকে মারছে তারপর ভাত খাওয়ায়েছে, তারপর আবার মারছে, এটা কোন জায়গায় আছে এমন করতে হবে? এ সময় তিনি অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন। এদিকে তোফাজ্জলের মৃত্যুটি সারাদেশের সাধারণ মানুষকে এবং বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন সহায়তাকারী সংস্থার CCIT. সেন্ট্রাল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের। সাবেক (অতিরিক্ত মহাপরিচালক ) সৈয়দ নুর আলম বাদশা তিনি বিবৃতিতে বলেন,তোফাজ্জলের মৃত্যুতে প্রতীয়মান বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে যাচ্ছে আমার মনে হচ্ছে বর্তমানে এদেশে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে । তাই আমরা সরকারকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সুরক্ষা ঘোষণাপত্র যা বাস্তবায়ন আইনে দ্রুত সরকারকে এ হত্যাকান্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি জোর দাবি জানান ।